একটি অবাক করা পোষ্য কাহিনী

আমরা সকলেই জন্তু পুষতে পছন্দ করি। অনেকে সাহস করে পুষতে সক্ষম থাকি বা অনেকে ভয়ের কারণে বা বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক কাজকে (ঝামেলা বললেও ভুল বলা হয় না ) পালন করার থেকে দূরে থাকার জন্যে পুষতে আগ্রহ প্ৰকাশ করিনা, কিন্তু নিজে না পুষতে পারলেও কোনো জায়গায় পোষা জন্তু দেখলে বা কাউর বাসস্থানে গিয়ে যদি একটি বা দুটি পোষা জন্তু দেখতে পাই তাহলে তাদের প্রতি প্রেম জেগেই থাকে। আর সেই পোষ্য যদি প্রত্যুত্তরে প্রেম জ্ঞাপন করে তাহলে তো আর কথাই নেই, কয়েক দিন পর আবার সেই পোষ্যের  সাথে দেখা করতে যাওয়ার চেষ্টা করি আমরা।  বর্তমান মানুষ প্রযুক্তির আধুনিকীকরণের সাথে নিজের পোষ্য জন্তু চয়নের ক্ষেত্রেও চিন্তা ধারা অনেক আধুনিক করে ফেলেছেন, মানে এক কালে আমরা পোষা জন্তু হিসাবে বেশিরভাগ কুকুর বেড়াল কে বেছে নিয়ে থাকলেও এখনকার দিনে মানুষ প্রায় সব কিছু পুষতে চেষ্টা করে। বাঘ,ভল্লুক ,কুমির,শেয়াল,গিরগিটি, বিষাক্ত মাকড়শা এমনকি বৃহদাকার সাপ ও কোনো ভয় ভীতি ছাড়া অনায়াসে পুষে ফেলতে পারেন আজকের দিনের মুক্ত চিন্তাধারা সম্পন্ন উদার মানুষ মালিকেরা। বাড়িতে থাকা অন্যান্য সদস্যদের মতন পুষ্যিদেরও যথেষ্ট যত্ন আর্তি করা হয়, তাদের শরীর খারাপ বা অন্য কোনোরকম অস্বাভাবিক চলাচলতি দেখতে পেলে আমরা মালিকেরা রীতিমতো দুঃশ্চিন্তায় পরে যাই। উন্মাদের মতন পুষ্য কে নিয়ে ছুটি নামি দামি পশুচিকিৎসকদের কাছে, খরচ নিয়ে কোনো চিন্তা করিনা, খালি "আমার প্রিয়বাবু কে সুস্থ করে দিন!" তাহলেই হবে । এমনি একদিন বিশেষভাবে  দুঃশ্চিন্তা গ্রস্থ হয়ে একটি মহিলা তার অসুস্থ পোষ্য ময়াল সাপ (Python) কে নিয়ে দ্বারস্থ হন শহরের এক পশুচিকিৎসকের কাছে। চিকিৎসক নিয়ম মতন অসুস্থতার কারন ঠাহর করবার জন্যে সমস্ত বিষয় বস্তু জানতে চাইলেন মহিলার কাছ থেকে। মালকিন জানালেন যে অনেক ছোট থেকে রয়েছে এই ময়াল সাপটি, সময়মতোন খাওয়া দাওয়া সেবা শুশ্রুষা সবই করেন তিনি। সুস্থভাবে এবং ভালোভাবে বেড়ে উঠতে থাকে সাপটি, কোনো রকম রোগ বা অসুস্থতা এর আগে সাপটি পড়েনি কিন্তু ইদানীং কিছুদিন হলো সে খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তার পছন্দ মতো কোনো খাবারই আর মুখে তুলছে না। চিকিৎসক দেখলে সাপটি মাদী ময়াল যার দৈর্ঘ্য ইতিমধ্যে ৭ ফুট ছাড়িয়ে গিয়েছে।পরবর্তী প্রশ্নের উত্তর শুনে চিকিৎসক চমকে গেলেন কিন্তু মালকিন তার থেকেও বেশি আশ্চর্য হয়ে গেলেন চিকিৎসকের বিবৃতি শুনে। চিকিৎসক মালকিনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে রাতে সাপটি কোথায় ঘুমোয়, প্রত্যুত্তরে মালকিন অকপটে বলে দেন যে ছোট বেলা থেকেই সে তার সাথে রাতে একই বিছানায় ঘুমায়। চিকিৎসক আরো জানতে চাইলেন যে সাপটির ঘুমোনোর ভঙ্গিটি কেমন, উত্তরে মহিলা স্বীকার করেন যে ময়ালটি রীতিমতো তাকে আলিঙ্গন করে ঘুমিয়ে থাকে।চিকিৎসক তখন জানালেন যে সাধারণত কোনো সরীসৃপ উপবাস রাখতে শুরু করে যখন তারা অনেক বড় কোনো বস্তু খেয়ে নিজের খিদে মেটাতে চায়, যত তারা ক্ষুদার্ত থাকবে ততো তারা বড় শিকার হজম করতে সক্ষম হবে, মালকিনের সাপটি এমনই কিছু বড়ো ভোজের অপেক্ষা করে রয়েছে, আর সেই পরবর্তী ভোজটি নিঃসন্দেহে তার মালকিন নিজেই। সাপটি তাকে আলিঙ্গন করে থাকে তার কারণ ভোজের সম্পূর্ণ আয়তন এবং উচ্চতা সম্বদ্ধে সাপটি একটি ধারণা করতে চাইছে এবং যখন সে সমস্ত হিসাব করে ফেলতে সক্ষম হয়েছে তখন থেকেই সে উপবাস রাখতে শুরু করে দিয়েছে। চিকিৎসকের মুখে এই বিবৃতি শুনে মালকিন রীতি মতো হতবাক এবং হতভম্ব। চিকিৎসক আরো জানান যে মহিলা সাপ পুষতে কোনোরকম ভুল ত্রুটি করেননি, শুধুমাত্র সাপের সাথে রাতে ঘুমোনোটা আশাতিরিক্ত। বিপদের যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্যে রাতে সাপটিকে কোনো খাঁচা বা কোনো সাপ রাখার বাক্সে আটকে রাখার নির্দেশ দেন। আশ্চর্যজনক সৌভাগ্যের জোরে এই যাত্রায় সেই মহিলা বেঁচে গেলেন।
সম্ভবত এই ঘটনাটি ২০০৫ সালে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম দ্বারা পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পরে। আজকের দিনেও এই ঘটনা অনেক সংবাদ মাধ্যম বা অন্যান্য ইন্টারনেট সাইটের দ্বারা নিয়মিত ছড়িয়ে পড়ছে। কোনো অজ্ঞাত কারণে সেই মালকিনের কোনো পরিচয় বিশেষ জানা যায় নি, এমন কি কোন দেশে বাসিন্দা তিনি ছিলেন সেটাও জানা সম্ভব হয়নি।সেসব না জানা গেলেও যে বিশেষ পোষ্য সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা তিনি মানুষের মাঝখানে ভাগ করে দিয়েগেছেন তা সত্যি হার হিম করা।

Comments

Followers