সাধারণত আমরা কৃত্রিম উপগ্রহের বিষয়ে প্রতক্ষ ভাবে জানতে শুরু করলাম ১৯৫৭ সাল থেকে। সেই সালে, ৪ঠা অক্টোবরে,
সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রথম মনুষ্য-নির্মিত কৃত্রিম উপগ্রহ পৃথিবীর কক্ষপথের উদ্দেশ্যে উৎক্ষেপণ করেছিল, নাম দিয়েছিলো
"স্পুটনিক ১"। তার পর থেকে দেশ বিদেশ জুড়ে সবাই পাল্লা দিয়ে বিভিন্ন গ্রহ অথবা পৃথিবীর বিভিন্ন অজানা বিষয়ে জানতে প্রচুর পরিমানে কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে প্রেরণ করে চলেছে , অনেক ক্ষেত্রে তাতে করে মানুষ মহাকাশচারীরাও যাচ্ছেন। ১৯৫৭ সালের পর থেকে এখনো পর্যন্ত প্রায় ৮৩৭৮ টি কৃত্রিম উপগ্ৰহ মহাকাশে পাঠানো হয়েছে যার মধ্যে বর্তমানে ৩০০০ টিরো বেশি উপগ্রহ প্রতিনিয়ত পৃথিবীর চারিপাশে প্রদক্ষিণ করছে এবং বিভিন্ন গুরুত্তপূর্ণ তথ্য পৃথিবীতে থাকা মানুষের কাছে প্রেরণ করে চলেছে, সুদূর ভবিষতে আরো করবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ১৯৫৭ সালের আগের থেকেই কিন্তু একটি অজ্ঞাত উপগ্রহ পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে ক্রমাগত পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে, আর সেটি কোনো ভাবে কোনো কালেই মনুষ্য দ্বারা নির্মিত নয়।
Black Knight Satellite এতটাই রহস্যে আবৃত যে আজকের দিনেও বৈজ্ঞানিক মহলের কাছে এই উপগ্রহ নিয়ে তেমন কোনো সন্তোষজনক তথ্য নেই।
Black Knight Satellite-এর প্রথম প্রকাশ ঘটে ১৮৯৯ সালে বিশ্ববিখ্যাত বৈজ্ঞানিক নিকোলা টেসলার দ্বারা। একটি বেতার তরঙ্গের বিষয়ে গবেষণা চালানো কালীন তিনি একরকম অজানা সংকেত শুনতে শুরু করেন। সংকেত শুনে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে এইটি পৃথিবী থেকে আসা কোনোরকম প্রাকৃতিক বা মনুষ্য দ্বারা প্রেরিত কোনো সংকেত নয়। পরবর্তীকালে তিনি এই অজ্ঞাত সংকেতের উৎপত্তির বিষয়ে জানান যে "এটি অন্য কোনো বুদ্ধিমান বহিরাগত উৎস থেকে প্রেরিত সংকেত, সম্ভবত মঙ্গল গ্রহের বাসিন্দা। "
|
বাঁদিকে কালো বিন্দুটি BLACK Knight Satellite সৌজন্যে : NASA |
বর্তমান বৈজ্ঞানিকরা মনে করেন যে বৈজ্ঞানিক নিকোলা টেসলার শোনা সেই সংকেত প্রেরণ হচ্ছিলো এই
Black Knight Satellite থেকে এবং এটি আজকের দিনেও নিয়মিতভাবে প্রেরিত হচ্ছে। কিন্তু বৈজ্ঞানিকরা সেই সংকেতের মানে বের করতে এখনো পর্যন্ত অক্ষম। তারা এটি জানতে পেরেছেন যে যেমন নিয়মিত সংকেত সেই অজ্ঞাত উপগ্রহ পৃথিবীতে পাঠাচ্ছে তেমন অজ্ঞাত কোনো মহাকাশেও নিয়মিত প্রেরণ করছে। ১৯৯৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্টের একটি মহাকাশ যাত্রায়
STS -৮৮ মিশন চলাকালীন মহাকাশচারীরা
Black Knight Satellite এর অনেক গুলো ফটো তুলতে সক্ষম হন এবং NASA এই উপগ্রহকে নেহাতই কোনো কৃত্রিম উপগ্রহের ধ্বংসাবশেষ বলে চিহ্নিত করে। কিন্তু ১৮৯৯ সালের পরে এবং ১৯৫৭ সালের আগে দেশ বিদেশ জুড়ে অনেক বৈজ্ঞানিকই পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরতে থাকা এই অজ্ঞাত উপগ্রহকে দেখতে পেয়েছিলেন এবং অনেক গবেষক বেতার মাধ্যমে উপগ্রহ থেকে প্রসারিত সংকেত শুনতে পেয়েছিলেন ।
Black Knight Satellite খুবই ধীর গতিতে পৃথিবীতে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে প্রদক্ষিণ করছে এবং এর কোনো নির্দিষ্ট কক্ষপথ না থাকায় সচরাচর এটিকে দৃষ্টিগোচর করাও সম্ভব নয়। বিভিন্ন রকম গবেষণা এবং পর্যবেক্ষণের দ্বারা বৈজ্ঞানিকরা অনুমান করেছেন যে
Black Knight Satellite হয়তো ১৩০০০ বছর কি তারও আগের থেকে পৃথিবীকে প্রদক্ষীণ করেচলেছে। অনেকে এটাও মনে করেন যে কোনো অজ্ঞাত বহিরাগতদের দ্বারা প্রেরিত এই উপগ্রহ হয়তো আমাদের পৃথিবীর সমস্ত গতিবিধির ব্যাপারে নজর রাখতে পাঠানো হয়েছে যেমন আমরা অন্য গ্রহের বিষয়ে জানতে বিভিন্ন কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়ে থাকি। নস্ট্রাডামাস একদা বলেগিয়েছিলেন যে
"মনুষ্যজাতি একদিন এক বস্তু আবিষ্কার করবে, যা মহাকাশে ভাসছে এবং যা প্রহরী দ্বারা প্রেরিত ", অনেকেই এই ভবিষ্যৎবাণীর সাথে
Black Knight Satellite এর উপস্থিতির
মিল খুঁজে পান।
NASA-র
Black Knight Satellite কে উপগ্রহ মানতে আপত্তি জানানোর বিষয়টিকে অনেক বৈজ্ঞানিকরাই সন্দেহের চোখে দেখেছেন, কারণ এই অজ্ঞাত উপগ্রহর উপর চালানো বিভিন্ন পর্যবেক্ষণের দ্বারা এতো কিছু অত্যাশ্চর্য উদারহণ পাওয়ার পরে আলাদা রকম কোনো মত থাকাটা স্বাভাবিক নয়।
|
ভাসমান BLACK Knight Satellite সৌজন্যে : VICE |
Comments