কোডিনহি (KODINHO), ভারতবর্ষের
কেরালা রাজ্যে অবস্থিত মালাপ্পুরাম জেলার একটি রহস্যময় ছোট গ্রাম। আর গ্রামের এই
রহস্যময় ব্যাপার উদ্ঘাটন করতে গিয়ে বৈজ্ঞানিক মহলের কপালে দেখা দিয়েছে দীর্ঘ ভ্রূকুটি। বিভিন্ন অনুমান অনুযায়ী, এই
কোডিনহি গ্রামে বসবাস করছেন আনুমানিক ২০০০টি পরিবার যার মধ্যে রয়েছে ৪০০ জোড়া যমজ। ২০০৮ সালে সরকারি দপ্তর থেকে করা নিরীক্ষণ অনুযায়ী এই গ্রামে সেই সময়ে জমজ সংখ্যা ছিল ২৮০ জোড়া, যা পরবর্তী কালে অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে চলেছে। দেশ জুড়ে সাধারণত যমজ জন্মের পরিমান ১০০০ জন্মে মাত্র ৯টি, এর বেশি নয়। সেইখানে একমাত্র
কোডিনহি গ্রামে তা ১০০০ এ ৪৫ টি। অর্থাৎ বলা যেতেপারে প্রতি পরিবারেই অন্তত একটি জোড়া যমজ সন্তান নিশ্চই জন্ম নিচ্ছে। এই রকম বিপুল পরিমানে যমজ সন্তান জন্মের হার আর অন্য কোথাও নেই। ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে, কিছু নামজাদা পর্যবেক্ষণ সংস্থা যেমন
CSIR-Centre for Cellular and Molecular Biology, Kerala University of Fisheries and Ocean Studies (KUFOS) এবং জার্মানি আর লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনার্থীরা আসেন এই গ্রামের এমন অদ্ভুত ঘটনার উত্তর সন্ধান করবার জন্যে। পর্যবেক্ষকরা স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন তাদের DNA গুলিকে পর্যবেক্ষণ করতে। এই পর্যবেক্ষণ
কোডিনহি ছাড়াও আরো কিছু প্রদেশে যেমন দক্ষিণ ভিয়েতনামের হুং লোক অঞ্চল,নাইজেরিয়ার ইগবো-ওরা এবং ব্রাজিলের ক্যানডিডা গোডী ইত্যাদিতে করা হয়ে থাকে যেখানে যমজ জন্মের হার বেশি। বিভিন্ন পর্যবেক্ষণের পরে জানানো হয় যে এমন ঘটনা ঘটার পিছনে লুকিয়ে আছে প্রকৃতি নিজেই। বৈজ্ঞানিকরা মনে করেন এই সমস্ত স্থানে, যেখানে যমজ জন্ম নেবার হার বেশি , সেখানের জল এবং বায়ু তে এমন কিছু পদার্থ আছে যা এই প্রক্রিয়া সাধনে সাহায্য করে। তবে এই ব্যাখ্যা নিতান্তই অনুমানিক। গবেষণার অন্যতম সদস্য ভেলভান টুয়েবজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর তিরুমালস্বামী বলেছেন, গবেষণাটি "যমজদের বংশগতি নির্ধারণকারী জিনগত কারণগুলি চিহ্নিত করবে। অভিন্ন যমজ হওয়ার জন্য এখনও কোন জেনেটিক লিঙ্ক সনাক্ত করা যায় নি এবং ঘটনার পিছনের আসল কারণটি এখনও নির্ধারণ করা যায়নি "।
কোডিনহি গ্রাম আপাতত "যমজের গ্রাম" হিসাবে দেশ-বিদেশ জুড়ে প্রসিদ্ধ। গ্রামের প্রবেশ পথে বিশাল অক্ষরে লেখা আছে
"Welcome to the God's own Twins Village--Kodinhi”। ইতিমধ্যে, কোডিনির লোকেরা তাদের নতুন খ্যাতি এবং রহস্যময় গ্রাম নিয়ে আনন্দিত আছেন । এটি TAKA -এর জন্মস্থান,
the Twins and Kins Association , এমন একটি সংস্থা যা এই স্থানের যমজ সন্তানদের শিক্ষিত করতে এবং তাদেরকে সবরকম দিকে থেকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন।
Comments