Cannibalism এবং Issei Sagawa


স্বয়ং  ইস্সেই  সাগাওয়া 
বিমান থেকে নামার পর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে তাকে যেটা প্রশ্ন করা হয়েছিল সেটা ছিল "কেমন লাগলো আপনার একটি স্ত্রী মানুষের মাংশ খেয়ে?" তিনি নির্দ্বিধায় উত্তর দিলেন "দারুন সুস্বাদু "। হয়তো এই ঘটনার ব্যাপারে অনেকেই জানবেন কিংবা নাও জানতে পাড়াতেও আশ্চর্য হবার কিছু নেই।  পৃথিবীর হাজার হাজার বছরের ইতিহাসে এমন বরবর্বতার নজির অনেক থাকলেও তেমন প্রচারের অভাবে তা লোক সমক্ষে আসতে পারেনি। ইস্সেই  সাগাওয়া র কাহিনীও অনেকটা এমনি। জন্ম ২৬শে  এপ্রিল, ১৯৪৯ সালে জাপানের কোবে হ্যাগো এলাকার  একটি বিত্তশালী পরিবারে। প্রথম দিকে তার নরমাংস ভক্ষণে আসক্তি থাকার কথা কেউ না জানলেও পরবর্তী কালে, তার ২৪ বছর বয়সে সেটি সামান্য আত্মপ্রকাশ পায়। পুলিশ দপ্তর থেকে জানা যায় যে ১৯৭৩ সালে , জাপানে টোকিও শহরে ইস্সেই একটি লম্বা জার্মানি মহিলাকে তার বাড়ি পর্যন্ত পিছু করেন , তার বাড়ির ভিতরে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা সেই মহিলাটির নিতম্ব থেকে সামান্য মাংস কেটে নিয়ে পালতে চেষ্টা করেন। এই কৃতকর্ম করার সময় মহিলা জেগে ওঠেন এবং ইস্সেই কে সজোড়ে  ধাক্কা  দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন।  পরবর্তীকালে পুলিশ ঘটনা চক্রে আসে এবং ইস্সেই সাগাওয়ার  বিরুদ্ধে "ধর্ষণের অভিযোগ" দায়ের করা হয়।  কিন্তু কোর্ট ইস্সেই  সাগাওয়ার  কাছ থেকে তার এমন কাজ করার কোনো কারন জানতে পারেনি। এবার চলে আসা যাক ১৯৮১ সালের সেই ঘটনাতে, যে ঘটনার জন্য আজকে আমরা মূলত ইস্সেই  সাগাওয়া কে চিনি। জুন মাসের ১১ তারিখ, ফ্রান্স। ইস্সেই র বয়স এখন ৩২, ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে Ph.D করতে এসেছেন প্যারিসের সোর্বোন বিশ্ববিদ্যালয়ে।
রেনে হার্টভেল্ট 
সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহপাঠী ছিলেন রেনে হার্টভেল্ট নামক একজন ওলন্দাজ যুবতী। যাকে ইস্সেই  সাগাওয়া School assignment এর কবিতা অনুবাদ করার অজুহাতে  নৈশ ভজনে নিজের বাসভবনে আমন্ত্রণ করেন। রেনেকে আমন্ত্রনের করার পিছনে ছিল একটিমাত্র উদ্দেশ্য, তাকে হত্যা করে তার দেহের মাংস আত্মসাৎ করা। শারীরিক গঠনের দিক থেকে ইস্সেই  কোনোদিনই  নিজেকে সুপুরুষ বলে মনে করতেন না , তাই তার মত অনুযায়ী  তিনি একজন সুন্দরী বলিষ্ঠ যুবতী কে বেছে নেন তার দৈহিক ঘার্তি  পূরণের জন্যে। ২৫ বছর বয়সের রেনে ছিলেন স্বাভাবিকভাবেই সুন্দরী এবং স্বাস্থ্যবতী। রেনে আসার পরপর, যখন তিনি কবিতা পড়া শুরু করেছেন টেবিল এ বসে ইস্সেই র দিকে পিঠ রেখে, তখন ইস্সেই  আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে রেনের ঘাড়ে  নিশানা করে গুলি নিঃক্ষেপ  করেন। কিছুক্ষন কিংকর্তব্যবিমূঢ় থাকার পর ইস্সেই  তার কষে রাখা ছকের দিকে মনোযোগ স্থাপন করেন। প্রথমে মৃতদেহের সাথে ধর্ষণ এবং পরে তাঁর  মাংস  ছিঁড়ে  খাবার চেষ্টা করেন। সেই সময় ইস্সেই  অনুভব করলেন যে তার দাঁত  তেমন ধারালো নয়। তাই দেরি না করে সেই রাতেই তিনি চলে  গেলেন একটি ধারালো ছুরি কেনার জন্যে কাছের একটি দোকানে। রেনের শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে খাবার পরে বাকি খাবারযোগ্য অংশ প্যাকেট করে রাখলেন fridge এ। নিয়মিত ভাবে ছবি ও তুলে রাখতেন সেই অবশিষ্ট শবদেহের।একসময় যখন বাকি অবশিষ্ট দেহাবশেষকে বোইস  ডি  বোলনে এর একটি হ্রদে ফেলেদিতে যাচ্ছিলেন তখন এলাকায় থাকা ফরাসি পুলিশের কাছে তিনি ধরা পরেন।
সুটকেসে পাওয়া  অবশিষ্ট দেহাবশেষ যাচাই  করছেন ফরাসি পুলিশদল 
ধরা পরা  ইস্সেই  সাগাওয়ার কাছে তখন ছিল ২টি সুইটকেস যাতে ছিল মৃত রেনে হার্টভেল্ট-এর  কাটাছেঁড়া  অবশিষ্ট অংশ। পরবর্তীকালে বিত্তশালী সাগাওয়া পরিবার ইস্সেই র প্রতিরক্ষার জন্যে আইনজীবী রাখেন এবং প্রায় ২ বছর case  চলার পরে আদালত ইস্সেই  সাগাওয়াকে  আইনত উন্মাদ বলে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করার নির্দেশ দেন। ফরাসি অভিযোগ বাতিল হয়েযাওয়ার দরুন জাপানি সরকার পরবর্তী কালে ইস্সেই কে কোনোরকম আইনত বাঁধনে বাঁধতে পারেনি। নিজের দেশে আজকে তিনি পুরোপুরি মুক্ত। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৭ সালে, অনেক নামজাদা অনুষ্ঠানে তাকে নিমন্ত্রিত করা হয়, তার লেখা জীবনীও প্রকাশ পায়, তার আঁকা ছবিও অনেক সুনাম অর্জন করে,কিন্তু সেসব বেশি দিনের জন্যে স্থায়ী থাকেনা। পিতামাতা মারা যাওয়ার পরে ২০০৫ সালে, ইস্সেই  কে অনেক আর্থিক অনটনের মধ্যে থাকতে হয়, তার কুখ্যাতির জন্যে ভালো চাকরি পাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনা। গুরুত্বর ভাবে অসুস্থ হয়ে তিনি ২০১৩ সালে হাসপাতালে ভর্তি হন। Cerebral Infarction এর কারণে তার স্নায়ুতন্ত্র পুরোপুরি বিকল হয়ে পরে। হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পরে বর্তমানে ইস্সেই সাগাওয়ার দেখাশোনা তার নিজের বাড়িতে তার ভাই করছেন।

Comments

Anonymous said…
Horrible!!!!

Followers