Kevin Carter আর "The vulture and the little girl"

Kevin Carter
নামটি শুনে এক লহমায় হয়তো সেরকম কিছু ঠাহর করা অসম্ভব। যারা "সাংবাদিক বা সাংবাদিকতা" বা সেরকম কোনো পেশায় লিপ্ত আছেন তারা হয়তো "The vulture and the little girl" এই বিষয়ে কিছু হলেও জানতে পারেন। "The vulture and the little girl" এই নামটি ১৯৯৩ সালের খুবই বিখ্যাত একটি ফোটোগ্রাফ-এর। যেটি পরবর্তীকালে "Pulitzer Prize" ও পেয়ে থাকে যা সাংবাদিক মহলের সবথেকে সম্মানীয় পুরস্কারের মধ্যে অন্যতম। Kevin  Carter  যিনি এই ফোটোগ্রাফ টি তুলেছিলেন তিনি তার এই অসাধারন সৃজনশীলতার জন্য যেমন সুখ্যাতি অর্জন করেন তেমন অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় যা Kevin  Carter এর মানবিকতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে। ১৯৬০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর, South Africa র Johannesburg এ একটি মধ্যবিত্ত শ্বেতাঙ্গ পরিবারে জন্ম নেন Kevin  Carter. High  School  এর পরে তিনি তার পড়াশুনার পথ বন্ধ করে প্রথমে একটি সামরিক দলের ফার্মাসিস্ট, পরে Air Force এ ৪ বছর কাটান। কর্মরত থাকা কালীন একদিন সামরিক মেস হলের ভিতরে, একটি কৃষ্ণাঙ্গ কর্মচারীকে অন্য শেতাঙ্গদের হাত থেকে অপমানিত হওয়ার থেকে বাঁচাতে গিয়ে ভীষণ ভাবে সেই অন্য শ্বেতাঙ্গ কর্মচারীদের হাতে প্রহৃত হন। এই ঘটনার পরে তিনি কাউকে কিছু না জানিয়ে সেই Service  ছেড়ে দেন এবং বেতারে Disc -Jockey হিসাবে জীবন শুরু করেন "david" ছদ্মনামে। সেখানেও অনেক বাধা প্রতিকূলতা আসার পরে তিনি আবার Military Service এ ফিরে যান। ১৯৮৩ সালে প্রিটোরিয়াতে চার্চ স্ট্রিট বোম্বিং  প্রত্যক্ষ ভাবে দেখার পরে তিনি শেষমেশ  সাংবাদিক এবং ফটোগ্রাফার হবার সিদ্ধান্ত নেন।
"The vulture and the little girl"
"The vulture and the little girl" এই ছবিটিতে দেখা যায় একটি মরণাপন্ন ছোটো মেয়েকে, যার মৃত্যুর অপেক্ষা করছে পাশে বসে থাকা একটি শকুন। এই প্রখ্যাত ফোটোগ্রাফটি তুলবার  সময় Kevin Carter রীতিমত বিচলিত হয়ে ওঠেছিলেন।  তার সঙ্গে থাকা তার সহচর Silva জানান , সেই ফটোগ্রাফ শেষ করে Kevin  সেই শকুনটিকে  সেখান থেকে তাড়ান এবং পরে তারা UN এর একটি প্লেন করে Kongor উদ্দেশ্যে রওনা দেন।  মেয়েটি পরে আদৌ বেঁচে গিয়েছিল কিনা সেটা সঠিকভাবে সেই সময়কালীন জানা যায়নি। ২৬শে  March, ১৯৯৩ সালে সেই ফোটোগ্রাফটি  The New York Times এ প্রথম প্রকাশিত হয়। ফটোটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পরার সাথে সাথে সবাই প্রশ্ন করতে শুরু করেন "মেয়েটির নিয়তি" ব্যাপারে, শেষ পর্যন্ত তার পরিনাম কি হয়েছিল সেটা Kevin জানালেও সেটি প্রমান করার মতো তথ্য কিছুই তখন তার কাছে ছিলোনা। April ১৯৯৪ সালে, ফোটোগ্রাফটি Feature Photography র জন্যে Pulitzer Prize পায় । পুরষ্কার জিতবার সত্ত্বেও, সাংবাদিক মহলে Kevin কে অনেক ক্ষেত্রেই দোষী সাবস্ত করা হয়েছিল কারন তিনি শিশুটিকে সাহায্য না করে তার ফটো তুলতে ব্যস্ত ছিলেন, তার দেওয়া কোনোরকম স্বীকারোক্তিতে কেউ বিশ্বাস করতে পারেননি।  "একটি ফটোগ্রাফার তার নিজের জীবিকার আগে একজন মানুষ। আর একজন প্রকৃত মানুষ হিসাবে তার বিপদে পড়া মানুষ কে বাঁচানোই প্রথম কর্তব্য।" এরকম কথা তিনি প্রতিনিয়ত শুনতে থাকেন। বিভিন্নরকম সাক্ষাৎকারে তার মানবিকতার ওপর প্রশ্ন তুলে তাকে অনেকভাবে অপদস্থ এবং অপমানিত করা হয়। একরকম হতাশাগ্রস্থ হয়ে ২৭শে জুলাই , ১৯৯৪ সালে মাত্র ৩৩ বছর বয়সে তিনি আত্মহত্যা করেন। ২০১১ সালে জানা যায় ফোটোতে মেয়ের পরিচয় দেওয়া শিশুটি আসলে একটি ছেলে যার নাম Kong Nyong.  Kong এর বাবা জানান যে সেবারের মতো শিশুটি UN এর Food  Aid Station  এ পৌঁছে বেঁচে গিয়েছিলো ঠিকই কিন্তু পরে ২০০৭ সালে একটি দুরারোগ্য জ্বর এ তার মৃত্যু হয়।

Comments

Followers